রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭

চাষী



সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা।
দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?
পুণ্য অত হবে নাক সব করিলে জড়।
মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ,
সবারই সে অন্ন জোগায় নাইক গর্ব লেশ।
ব্রত তাহার পরের হিত, সুখ নাহি চায় নিজে,
রৌদ্র দাহে শুকায় তনু, মেঘের জলে ভিজে।
আমার দেশের মাটির ছেলে, নমি বারংবার
তোমায় দেখে চূর্ণ হউক সবার অহংকার।

মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭

মৃত স্বপ্ন মৃত বসবাস ।


মৃত স্বপ্ন মৃত বসবাস ।
 লেখক : মহি উদ্দিন (সুজন)
============================== 
পল্লবে পুস্পে মুখরিত ছিল আমার 
 এই স্বপ্নের রঙ্গিন দুনিয়া ।
 অদৃশ্য ঝড়ে সুখ ঘুমিয়া,
হৃদয়টি আছে সুধু কষ্টে বুনিয়া ।।
 .................................. 
প্রতি নিশিতে স্মৃতির চারণে রাখেনা
 আমায় এক বিন্দু সুখে । 
আমার প্রেম উজার করে, সুখেই আছ 
তুমি অন্য কারো বুকে ।।
 ................................... 
জানিনা কেন তোমার সাথে বেঁধেছিলাম 
অভিশাপ্ত এজীবন ।
 তোমার বিহনে দু’লোচনে অশ্রুসিক্ত খুঁজে 
সুধু একটি মরণ ।।
 ..................................
 চাইনা তোমার জীবনে কখনো নাপরে
 কোন কলঙ্কের দাগ । 
কলঙ্কিত জীবন নিয়া আমি সুখেই আছি 
কলঙ্ক আমারি থাক ।।

রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭

স্বপ্নেরা আর কড়া নাড়ে না ইচ্ছের দরজায়,

.......... তুমি তো এলে না........... 
*************************************
লেখক : মহি উদ্দিন (সুজন)

 
 স্বপ্নেরা আর কড়া নাড়ে না ইচ্ছের দরজায়,
 আমার সব স্বপ্ন জুড়ে তো তুমিই ছিলে
 কত সময় বয়ে গেল,
 কত হাসি ; চাপা পড়ে গেল কান্নার শব্দে
, তবুও তুমি জানলে না। 
 তুমি আসবে বলে 
 সাজিয়েছিলাম আমার ছোট্ট অন্ধকার কুঠুরি
 জোনাকির আলো দিয়ে,
 আকাশের বুক থেকে ছিনিয়ে
 নিয়ে এসেছিলাম একমুঠো ধূসর মেঘ,
 তুমি আর আমি একই সাথে ভিজবো বলে ,
 তবুও তুমি আসলে না। 
আমার ইচ্ছের দরজা ভেঙে যায়
 হেমন্তের প্রবল ঝড়বাতাসে,
 লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ছোট্ট কুঠুরি, 
আমি আবারো গড়ে তুলি 
নতুন করে বেদনা আর প্রতীক্ষা দিয়ে,
 জানি তবুও তুমি আসবে না। 
আমার ইচ্ছের দরজায় প্রতিনিয়ত কড়া নেড়ে য়ায় কত দূঃখ,
 কত হাহাকার,
 আমি প্রতিবার দৌড়ে ছুটে যাই দরজার কাছে, 
 এই বুঝি তুমি এলে, 
এই বুঝি তুমি সকল কিছু ভুলে ঝাপিয়ে পড়বে আমার বুকে ;
 কিন্তু না; খুলে দেখি কেউ নেই,
 সব শূন্য ; সব অন্ধকার। 
সবই মিথ্যে, কই তোমার তো আসার কথা ছিলো না।

শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭

ঐ দুর পাহাড় ,হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমায় ,


ঐ দুর পাহাড় ,হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমায় ,
লেখক : জিয়াউর রহমান (সোহাগ)
********************************************* 
ঐ দুর পাহাড় ,হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমায় ,
হৃদয় ধাবিত প্রতিটি রক্তবিন্দু ছুটে যেতে চায় 
কিন্তু পারিনা
পারিনা আমার কর্তব্যের বাধায়
আমি মাটিতে কান পেতে শুনি
আটলান্টিকের প্রতিটি ঢেউয়ের কলতান
আমায় পিছু ডাকে প্রতিটি মুহুর্তে
কিন্তু পারিনা
পারিনা আমার কর্তব্যের বাধায়
এদেশের প্রতিটি বায়ুকণা
প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে যখন জমাট বাঁধতে চায়
তখনি কে যেন পিছু ডাকে
তাই আমি পারিনা
পারিনা আমার কর্তব্যের বাধায়
মনটা যখন ছুটে যায় গ্রাম্য বাঁশির সুরে
দুপাশে কাশবন বাধানো পথ
দুর থেকে বহুদুরে
সেথা আছে স্নেহ, মায়া, মমতার চাদর
সেথা আছে বাবা মায়ের কোমল আদর
চায় মন ছুটে যেতে
কিন্তু আমি পারিনা
পারিনা আমার কর্তব্যের বাধায়
কতদিন দেখিনা প্রিয়া তোমার কাজল আঁখি
দেখিনা মুক্তোঝরা মায়াময় হাসি
মাতাল হতাম তোমায় পাগল হতাম
তোমার চুলে খেলা করতাম, হারিয়ে যেতাম
কিন্তু পারিনা
হৃদয় মুচড়ে ওঠা ব্যথাগুলো চেপে রেখে
বলতে পারিনা বোঝাতেও পারিনা
আমি কষ্টে আছি
প্রতি মুহুর্ত হারিয়ে যেতে চাই
আমার বাংলায় আমার ধানক্ষেতে
আমার রৌদ্রভরা পদ্মা নদীতে
কিন্তু আমি পারিনা
পারিনা আমার কর্তব্যর বাধায়

রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭

সোনালি রোদ্ররে দিন গুলো এখন শুধুই অতীত


লেখক :- এম চিশতী
আমি প্রকৃতিকে অন্নেষন করি তোমার মাঝে তুমি আর প্রকৃতির মায়া জ্বালে আমি আজ আবদ্ধ! নিজেকে অনেক দূরে রাখার চেষ্টা করেছি কিন্ত পারিনি মায়ার টানে বার বার ছুটে এসেছি তোমার ও প্রকৃতির মাঝে যাহা তুমি বুঝতে পারনি। সবুজ শ্যামল মেঠে পথে একসাথে মিশে ছিলাম তুমি আর আমি সোনালি রোদ্ররে দিন গুলো এখন শুধুই অতীত। তাইতো বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছা করে তোমার কাছে। গিয়ে দেখি তুমি নাই শুধু আছে অবাগ লাগা প্রকৃতি মায়ার টানে নিজেকে ধরে রাখে মনে হয় এই বুঝি তুমি এলে ভাবনা গুলো মেলাতে পারিনা ।

ভোরের ফুল শিউলি ফেটার মতো তুমি এসেছিলে আমার জীবনে ভাবতেই অবাগ লাগে । মেঘ বালিকা তুমি স্বপ্নহারা বাস্তবিক এক কল্পনা মাত্র তোমার কোন অস্তিত্ব নাই মরিচিকার মতো তক্ত বালুকনার আবেশে জড়ালে নিজেকে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে তুমি কি করেছ। স্বপ্ন আর বাস্তব এক সাথে বসবাস করতে পারেনা হয়তো তোমার জানা ছিল না যদি জানতে তাহলে তুমি এমনটি করতে না আমার সাথে।

কি পেয়েছ আর কি হারিয়েছ তাহা কি তুমি বুঝতে পেরেছো এখন হয়তো তুমি বুঝতে পারবেনা কারন এখতো তোমার জীবন রঙ্গিন রং এ মিশে আছে। ভাবতেই অবাগ লাগে মানুষ কখনো নিজের সাথে বিশ্বস ঘাতকতা করতে পারেনা যে কাজটা তুমি করলে। দুঃখ করিনা কারন তুমি যদি ভাল থাক আমাকে ছাড়া আমি না হয় একাই থাকলাম ।

একাই ছিলাম একাই থাকতে হবে মাঝখানের সময়টাতে যদি তুমি না থাক তাতে কি যাজাবরের মতো বললে ভুল হবে। একজন মানুষ হিসাবে একাই থাকতে হবে অনন্ত সময় একা একা আমি না হয় একটু বেশি সময় পার করলাম তোমাকে ছাড়া।

মেঘ বালিকা তোমার অবস্থান কি তুমি জান সাহিত্য আর শিল্প এখনো মানুষকে বেঁচে থাকার অনুপ্ররোনা দেয় বাকী সময়টা না হয় সাহিত্য আর শিল্প কর্ম নিয়েই কাটাবো যে স্বপ্ন তুমি দেখিয়েছিলে। আমি যে স্বপ্ন হারা মানুষ বাস্তবতাতেই আমার অস্তিত্ব খুজে বেড়াই । কারন যে স্বপ্ন তুমি দেখেছিলে যার বাস্তব রুপদিতে হয়তো আবার জন্ম নিতে হবে তবুও পূরন হবে কিনা তাও বলতে পারছিনা।

ক্ষনস্থায়ী জীবনের জন্য এতোটা প্রয়োজন ছিল না যাহা তুমি করলে ? অবাগ লাগা প্রকৃতির মায়া জ্বালে নিজেকে জড়িয়েছি হয়তো বাকী সময়টা প্রকৃতির সাথেই কাটাবো নীরজন সেই নদীর পাড়ে যেখানে তুমি আমি আর স্বপ্ন এক সাথে বেড়ে উঠেছি। হারিয়ে যাওয়া সময় গুলো আজ শুধু স্মতি না হয় সেই টুকু অস্তিত্ব নিয়েই আমি বাকীটা সময় পার করে দেব ।

তুমি নাই তাতে কি আমার প্রকৃতিও একদিন তোমার মতো বৈচিত্র রুপদান করবে তখন হয়তো আমিই থাকবেনা এই ক্ষনস্থায়ী প্রকৃতির মাঝে এতে দুখ পাওয়ার কারন নাই এসেছিলাম মিশেছিলাম আবার চলে যাব প্রকৃতির নিয়তে এটাই সত্য। তুমি চলেগিয়ে আমার একটা ভুল সংসধন করে দিলে যাহা হয়তো কখনোই জানতে পারতাম না যে মানুষ এসেছে একা চলে য়াবে একা এটাই বিধাতার নিয়ম।

মাঝখানের সময়টা না হয় একা একাই থাকলাম এই মেঘ এই বৃষ্টি যাহা তুমি চেয়েছিলে। প্রকৃতির মাঝেই নিজেকে বিলিয়ে দেব তুমি কোন অস্তিত্ব খুজে পাবেনা আমার শেওলা পাতার মতো ভাসতে ভাসতে এক সময় আমি আমি মিশে যাব প্রকৃতির মাঝে এর কোন বিকল্প নাই। মানুষের অস্তিত্ব ক্ষনস্থায়ী এই পৃথিবীর বুকে অনন্ত কালের জন্য নিজেকে তৈরী করতে হবে যেখান থেকে এসেছিলাম একা আবার ফিরে যার একা ।
তোমার সাথে নিজেকে মিলাতে পারলামনা হয়তো যেখানে ছিলাম সেখানে তুমি ছিলে না তাই এতো ব্যবধান ভাল থাক মেঘ বালিকা আমি চলে যাচ্ছি অনন্ত কালের পথে যেখান থেকে আমি এসেছিলাম এই প্রকৃতির মাঝে। প্রত্যাশার সবটুকু বিশ্বাস আমাকে যেতেই হবে চিরদিন কেউ থাকতে পারবেনা তুমিও না একদিন এপথে তোমাকেও আসতে হবে শুন্য হাতে। যে সম্পদ তুমি অর্জন করার জন্য আমাকে একা করলে তা তোমাকে এক দিন ছেড়ে আসতেই হবে।
চির সত্য জন্ম মৃত্যু আর বেচেঁ থাকা মাঝ খানের মায়াটাই আত্মশুদ্ধ করার জন্য যাহা করতে দিলেনা তুমি।
প্রত্যাশা তোমার জন্য ?

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

৫ সন্তান নিজ ক্ষেত্রে সফল হলেও,বৃদ্ধা মায়ের হাতে ভিক্ষার থালা !

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের দরিদ্র কৃষক মৃত আইয়ুব আলীর সত্তরোর্ধ স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। নানা টানপোড়েনের মধ্যেও স্বামী- স্ত্রী মিলে সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন রত্নগর্ভা বৃদ্ধা মায়ের ছয় সন্তানের মধ্যে ৫ সন্তান নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হলেও ভিক্ষাবৃত্তি এখন এই মায়ের শেষ সহায়।

 সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান হলেও নানান অভাব অনাটনের সংসারে ৬ সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই দিন কেঁটেছে আইয়ুব আলী সরদার ও মনোয়ারা দম্পতির। ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর তারিখে আইয়ুব আলী সরদার মৃত্যুবরন করেন। কিন্তু ৬ সন্তানের প্রায় প্রত্যেককেই কম বেশি শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছিলেন তিনি।
অসহায় বৃদ্ধা এই মায়ের ৬ সন্তানের ৩ সন্তান পুলিশ কর্মকর্তা এক মাত্র মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা, এক ছেলে ব্যবসায়ী এবং আরেক ছেলে নিজের ব্যবহৃত ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

সন্তানদের মধ্যে বড় ৩ সন্তান এএসআই ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, এএসআই নেছার উদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকুরী করেন। একমাত্র কন্যা মরিয়ম সুলতানার বিয়ে হয়েছে, পাশের গ্রামেই শ্বশুরবাড়ি। তিনি  শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। অন্য ২ সন্তানের একজন শাহাবউদ্দিন। তার  নিজের ব্যবসা রয়েছে, নিজ কর্মক্ষেত্রে সে তিনিও প্রতিষ্ঠিত।  সর্বশেষ ষষ্ঠ সন্তানের নাম  গিয়াস উদ্দিন। অন্য ভাইদের মত অবশ্য গিয়াসউদ্দীন সচ্ছল নয়, নিজের ব্যবহৃত ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি ।
এতগুলো সফল সন্তান থাকলে তাদের গর্ভধারীনি মাতার স্বাভাবিক ভাবেই সোনায় সোহাগা থাকার কথা। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মনোয়ারা বেগমের ভাগ্যে ঘটেছে উল্টো চিত্র। সেই গর্ভধারিনী মাকে এখন দু-মুঠো আহারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় ভিক্ষার জন্য।

স্থানীয় প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পরই বৃদ্ধা মায়ের কপালে নেমে আসে দুর্ভোগ । গত কয়েকবছর ধরেই মা এখন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম এখন বয়সের ভারে দ্বারে দ্বারে স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতেও পারছেনা। বর্তমানে তিনি এতটাই মানবেতর জীবন যাপন করছে যে দিনে এক বেলা ভাতও জুটছে না তার ভাগ্যে।
গত ৪-৫ মাস আগে ভিক্ষা করতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে গিয়ে মনোয়ারা বেগমের কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাবুগঞ্জ উপজেলার স্টীল ব্রিজের পশ্বিম পার্শ্বে একটি খুঁপড়ী ঘরে বিনা চিকিৎসায় অনাহারে অর্ধাহারে বেঁচে আছেন।

মৃত্যু পথযাত্রী মনোয়ারা বেগমের পুত্র ইজি বাইক চালক গিয়াস উদ্দিন জানান, আমি সামান্য আয়ের মানুষ কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে আছি, আমার সাধ্যমত মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছি। এখন আমিও সহায় সম্বলহীন তাই বৃদ্ধ মা আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী। আমার তিন ভাই পুলিশ কর্মকর্তা তারা তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকে তারা মায়ের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না।

সবশেষ এই অসহায় বৃদ্ধা মায়ের জীর্ন ঝুপড়িতে গিয়ে প্রতিবেদক তার এমন দুরাবস্থায় ছেলেদের দূরে থাকার কারন জিজ্ঞেস করলে কোন উত্তর দেননি তিনি। দুচোখে ছলছল অশ্রু গড়িয়ে অব্যক্ত যন্ত্রনায় চুপ করে থেকেই যেন একরাশ ঘৃনা প্রকাশ করলেন এই স্বার্থপর পৃথিবীর প্রতি

ঘুমোতে যাওয়ার আগে এখন সবচেয়ে বেশি যে শব্দটা শুনি তা হল ‘রোহিঙ্গা’

ঘুম থেকে ওঠার পর আর ঘুমোতে যাওয়ার আগে এখন সবচেয়ে বেশি যে শব্দটা শুনি তা হল ‘রোহিঙ্গা’। অনেকেই তাদের পক্ষে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখি করছে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানে না ‘রোহিঙ্গা’ কারা। আমরা যদি সহজভাবে চিন্তা করি ‘রোহিঙ্গা’ কারা, তাহলে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে কিছু মানুষ বিশাল জলরাশির মাঝে খাবার পানি ও খাদ্য ছাড়া মৃত্যুর প্রহর গুনছে। পাঠকদের জন্য রোহিঙ্গাদের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হলো।
রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রহীন মানুষ। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের বসবাস। রাখাইন রাজ্যের আদি নাম আরাকান। যদিও রোহিঙ্গাদের পূর্বপুরুষরা শত শত বছর ধরে সেখানে আছে কিন্তু মায়ানমার / বার্মা সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে কখনো নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। রাষ্ট্রহীন মানুষ হিসেবে রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যসহ প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বাস করে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী।
খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে আরাকান অঞ্চল শাসন করতো চন্দ্র বংশ। আরব বণিকদের একটা জাহাজ রামব্রী দ্বীপের তীরে ভেঙে পড়ে। কিছু আরব তীরে এসে স্থানীয়দের কাছে সাহায্য চায়। রাজা মহত ইং চন্দ্র তাদের সাহায্য করেন। কিছু আরব স্থানীয় নারীদের বিয়ে করে। এসব আরব বণিক বসতি স্থাপনের আর্জি করলে মহত ইং চন্দ্র তা মঞ্জুর করেন।
চতুর্দশ শতকে আরাকানে মুসলিমরা বসতি স্থাপণ করে। ততকালীন বৌদ্ধ রাজা নারেমেইখলি ( যিনি তার রাজ্য পুনরুদ্ধার করেছিলেন গৌড়ের সুলতান জালালুদ্দিন শাহের সহযোগিতায় ) তার রাজ দরবারে মুসলিম উপদেষ্টা এবং সভাসদদের স্বাদরে গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু পরে দক্ষিণের বৌদ্ধ বর্মীরা আরাকান দখল করে নেয়, নারেমেইখলি পরাজিত হন। আরাকান দখলের পর বৌদ্ধ বর্মীরা সব রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাড়িয়ে দিয়েছিলো। তখন প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা ততকালীন ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্গত বাংলায় ( বর্তমান চট্রগ্রাম এলাকায় ) পালিয়ে গিয়েছিলো।
তবে আরো একটি গল্প প্রচলিত আছে, আরব বণিকদের জাহাজ ভেঙ্গে যাবার পর বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা।
তবে ইতিহাস এটা জানায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।
যখন ব্রিটিশদের দখলে মিয়ানমার আসে তখন ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু তার মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাম অন্তর্ভুক্তই ছিল না।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে। সেসময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয় এবং ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে।
রোহিঙ্গাদের মূল সমস্যা শুরু হয় ২০১২ সালে। জাতিগত দাঙ্গা লাগে বৌদ্ধ ও মুসলিমদের মাঝে। মুসলিমরা প্রাণ হারায় হাজারে হাজারে। পালিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। তারা পাড়ি দেয় থাইল্যান্ডের দিকে। বেশির ভাগ রোহিঙ্গাই থাই মাফিয়াদের হাতে পরে। নির্যাতিত হতে থাকে আরও বেশী। আর এখন পাওয়া যাচ্ছে থাই-মালোয়শিয়া সীমান্তে রোহিঙ্গাদের প্রচুর গণকবর।

কান্ডারী বলো মরিছে মানুষ - Investigation 360 Degree On Rohingya EP157 - ...



যাদের এসব বন্ধ করার সামর্থ্য আছে তারা চুপ করে নীরব সমর্থন করছে আর যারা এসব বন্ধ করতে দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছে তাদের কোনরূপ সাহায্যটুকুও করছেননা! ছিঃ! এ জীবন সত্যিই কীটপতঙ্গের, এ বিশ্ব সত্যিই কীটপতঙ্গের

শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বৃদ্ধাশ্রম থেকে বলছি,খোকা তুমি কেমন আছো


আমার আদর ও ভালোবাসা নিও। অনেক দিন তোমাকে দেখি না, আমার খুব কষ্ট হয়। কান্নায় আমার বুক ভেঙে যায়। আমার জন্য তোমার কী অনুভূতি আমি জানি না। তবে ছোটবেলায় তুমি আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝতে না। আমি যদি কখনও তোমার চোখের আড়াল হতাম মা মা বলে চিৎকার করতে। মাকে ছাড়া কারও কোলে তুমি যেতে না।
এগুলো তোমার মনে থাকার কথা নয়। তুমি একমুহূর্ত আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমার বিয়ের গয়না বিক্রি করে তোমার পড়ার খরচ জুগিয়েছি। হাঁটুর ব্যথাটা তোমার মাঝে মধ্যেই হতো। বাবা… এখনও কি তোমার সেই ব্যথাটা আছে? রাতের বেলায় তোমার মাথায় হাত না বুলিয়ে দিলে তুমি ঘুমাতে না। এখন তোমার কেমন ঘুম হয়? আমার কথা কি তোমার একবারও মনে হয় না?আমার আদর ও ভালোবাসা নিও। অনেক দিন তোমাকে দেখি না, আমার খুব কষ্ট হয়। কান্নায় আমার বুক ভেঙে যায়। আমার জন্য তোমার কী অনুভূতি আমি জানি না। তবে ছোটবেলায় তুমি আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝতে না। আমি যদি কখনও তোমার চোখের আড়াল হতাম মা মা বলে চিৎকার করতে। মাকে ছাড়া কারও কোলে তুমি যেতে না।২৪ অক্টোবর
সাত বছর বয়সে তুমি আমগাছ থেকে পড়ে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছিলে। তোমার বাবা হালের বলদ বিক্রি করে তোমার চিকিৎসা করিয়েছেন। তখন তিন দিন, তিন রাত তোমার পাশে না ঘুমিয়ে, না খেয়ে, গোসল না করে কাটিয়েছিলাম।

তুমি দুধ না খেয়ে ঘুমাতে না। তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমার কপালে যা লেখা আছে হবে। আমার জন্য তুমি কোনো চিন্তা করো না। আমি খুব ভালো আছি। কেবল তোমার চাঁদ মুখখানি দেখতে আমার খুব মন চায়। তুমি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবে। তোমার বোন….তার খবরাখবর নিও। আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলো আমি ভালো আছি।

আমি দোয়া করি, তোমাকে যেন আমার মতো বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে না হয়। কোনো এক জ্যোস্না ভরা রাতে আকাশ পানে তাকিয়ে জীবনের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু ভেবে নিও। বিবেকের কাছে উত্তর পেয়ে যাবে। তোমার কাছে আমার শেষ একটা ইচ্ছা আছে। আমি আশা করি তুমি আমার শেষ ইচ্ছাটা রাখবে। আমি মারা গেলে বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে আমাকে তোমার বাবার কবরের পাশে কবর দিও। এজন্য তোমাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। তোমার বাবা বিয়ের সময় যে নাকফুলটা দিয়েছিল সেটা আমার কাপড়ের আঁচলে বেঁধে রেখেছি। নাকফুলটা বিক্রি করে আমার কাফনের কাপড় কিনে নিও। তোমার ছোটবেলার একটি ছবি আমার কাছে রেখে দিয়েছি। ছবিটা দেখে দেখে মনে মনে ভাবি এটাই   কি আমার সেই খোকা!’
এইভাবে বেদনাময় একটি চিঠি ছেলে কাছে লেখেন জহুরা খাতুন।


বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

নীল আকাশ আর সবুজ মাঠ হাত বাড়ালেই কাশফুলের

পরিষ্কার নীল আকাশ আর সবুজ মাঠ। শব্দগুলো শুনলেই মনে হয় ঋতুর রানি শরতের নাম। মাত্র কয়দিন আগেই শুরু হয়েছে সেটা। বাংলার প্রকৃতিতে শরতের আবির্ভাব আবারো মুগ্ধ করেছে আমাদের।
শরতের শুভ্রতাই মহিমান্বিত। লিখেছেন সুরবি প্রত্যয়ী,আকাশে নীলের আধিক্য আর সাদা মেঘের শুভ্রতাই বলে দিচ্ছে বর্ষারানীকে বিদায় দিয়ে শরৎ হাজির। ইট-কাঠের শহরের মাঝে এই নীল-সাদার খেলা কিন্তু বেশ উপভোগ করে শহুরের ব্যস্ত মানুষগুলো। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী ঢাকার আশপাশের কাশবনগুলো জেগে উঠছে। প্রিয়জনের হাত ধরে ঘুরেই আসুন না হয়, নীল-সাদার হাতছানিকে সাক্ষী রেখে!
“শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি।” এভাবেই বাঙালির সামনে শরতের সৌন্দর্য উপস্থাপন করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার মতোই শরতে মুগ্ধ বাংলার কবিকূল।
শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু। কেননা শরতের আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার। নীল আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ যেন ভেসে বেড়ায়। “গ্রামের বধু যেমন মাটি লেপন করে নিজ গৃহকে নিপুণ করে তোলে, তেমনি শরৎকাল প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়। বর্ষার পরে গাছগুলো সজীব হয়ে ওঠে। আকাশে হালকা মেঘগুলো উড়ে উড়ে যায়।”
শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুল। শরৎ মানেই গাছে গাছে হাসনুহানা আর বিলে শাপলার সমারোহ। শরৎ মানেই গাছে পাকা তাল। সেই তাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস। আর ক্ষেতে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা। পানকৌড়িরা ডুবসাঁতার দেয় বিলের জলে, বক মাছ শিকারে ধ্যানে মগ্ন। শরতের সকালটা খুব অন্য রকম মেঘ আর নীলের বিস্তৃত দিগন্ত দেখে বোঝা যায় শরতের শুভ্রতা এসেছে প্রকৃতির মাঝে। ভোরে ঘাসের ওপর দিয়ে খালি পায়ে চলতে গিয়ে শিশিরের স্পর্শে শিহরিত মন। কাশবনে পড়ন্ত বিকাল নতুন অনুভূতি। শরতের মৃদু বাতাসে স্নিগ্ধ রোদ দিঘির জলে চিকচিক করছে।
কিন্তু সময়ের বিবর্তনে গ্রামে-গঞ্জে কাশফুলের আধিক্য কমে গেছে। আমরা মানুষরা শুধু লোভীর মতো প্রকৃতির কাছ থেকে খাদ্য চাই। কিন্তু প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিছুই করিনা। যেমনঃ আগে প্রায় প্রতিটি গ্রামে বটগাছ দেখা গেলেও এখন তেমনটা চোখে পড়ে না। মানুষ নিজের প্রয়োজনে সেগুলো কেটে ফেলছে। অথচ আগে এই বটগাছকে কেন্দ্র করে কত উৎসব হয়েছে। বটগাছের ছায়ায় মানুষ বিশ্রাম নিয়েছে। আশ্রয় নিয়েছে কত রকম পাখি আর পোকামাকড়। কিন্তু এখন আর সেসব নেই।

বালো বাসার কিছু কথা

মনের কথা ১ তুমি নেই, জানি তুমি ফিরে আসবেনা কখনো, হইতো অনেক কষ্টের মাঝে পাবোনা তোমার সান্তনা, তোমার হাসিতে লু...