শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

৫ সন্তান নিজ ক্ষেত্রে সফল হলেও,বৃদ্ধা মায়ের হাতে ভিক্ষার থালা !

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের দরিদ্র কৃষক মৃত আইয়ুব আলীর সত্তরোর্ধ স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। নানা টানপোড়েনের মধ্যেও স্বামী- স্ত্রী মিলে সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন রত্নগর্ভা বৃদ্ধা মায়ের ছয় সন্তানের মধ্যে ৫ সন্তান নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হলেও ভিক্ষাবৃত্তি এখন এই মায়ের শেষ সহায়।

 সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান হলেও নানান অভাব অনাটনের সংসারে ৬ সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই দিন কেঁটেছে আইয়ুব আলী সরদার ও মনোয়ারা দম্পতির। ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর তারিখে আইয়ুব আলী সরদার মৃত্যুবরন করেন। কিন্তু ৬ সন্তানের প্রায় প্রত্যেককেই কম বেশি শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছিলেন তিনি।
অসহায় বৃদ্ধা এই মায়ের ৬ সন্তানের ৩ সন্তান পুলিশ কর্মকর্তা এক মাত্র মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা, এক ছেলে ব্যবসায়ী এবং আরেক ছেলে নিজের ব্যবহৃত ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

সন্তানদের মধ্যে বড় ৩ সন্তান এএসআই ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, এএসআই নেছার উদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকুরী করেন। একমাত্র কন্যা মরিয়ম সুলতানার বিয়ে হয়েছে, পাশের গ্রামেই শ্বশুরবাড়ি। তিনি  শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। অন্য ২ সন্তানের একজন শাহাবউদ্দিন। তার  নিজের ব্যবসা রয়েছে, নিজ কর্মক্ষেত্রে সে তিনিও প্রতিষ্ঠিত।  সর্বশেষ ষষ্ঠ সন্তানের নাম  গিয়াস উদ্দিন। অন্য ভাইদের মত অবশ্য গিয়াসউদ্দীন সচ্ছল নয়, নিজের ব্যবহৃত ইজি বাইক ভাড়ায় চালিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি ।
এতগুলো সফল সন্তান থাকলে তাদের গর্ভধারীনি মাতার স্বাভাবিক ভাবেই সোনায় সোহাগা থাকার কথা। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মনোয়ারা বেগমের ভাগ্যে ঘটেছে উল্টো চিত্র। সেই গর্ভধারিনী মাকে এখন দু-মুঠো আহারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় ভিক্ষার জন্য।

স্থানীয় প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পরই বৃদ্ধা মায়ের কপালে নেমে আসে দুর্ভোগ । গত কয়েকবছর ধরেই মা এখন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম এখন বয়সের ভারে দ্বারে দ্বারে স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতেও পারছেনা। বর্তমানে তিনি এতটাই মানবেতর জীবন যাপন করছে যে দিনে এক বেলা ভাতও জুটছে না তার ভাগ্যে।
গত ৪-৫ মাস আগে ভিক্ষা করতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে গিয়ে মনোয়ারা বেগমের কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাবুগঞ্জ উপজেলার স্টীল ব্রিজের পশ্বিম পার্শ্বে একটি খুঁপড়ী ঘরে বিনা চিকিৎসায় অনাহারে অর্ধাহারে বেঁচে আছেন।

মৃত্যু পথযাত্রী মনোয়ারা বেগমের পুত্র ইজি বাইক চালক গিয়াস উদ্দিন জানান, আমি সামান্য আয়ের মানুষ কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে আছি, আমার সাধ্যমত মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছি। এখন আমিও সহায় সম্বলহীন তাই বৃদ্ধ মা আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী। আমার তিন ভাই পুলিশ কর্মকর্তা তারা তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকে তারা মায়ের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না।

সবশেষ এই অসহায় বৃদ্ধা মায়ের জীর্ন ঝুপড়িতে গিয়ে প্রতিবেদক তার এমন দুরাবস্থায় ছেলেদের দূরে থাকার কারন জিজ্ঞেস করলে কোন উত্তর দেননি তিনি। দুচোখে ছলছল অশ্রু গড়িয়ে অব্যক্ত যন্ত্রনায় চুপ করে থেকেই যেন একরাশ ঘৃনা প্রকাশ করলেন এই স্বার্থপর পৃথিবীর প্রতি

বালো বাসার কিছু কথা

মনের কথা ১ তুমি নেই, জানি তুমি ফিরে আসবেনা কখনো, হইতো অনেক কষ্টের মাঝে পাবোনা তোমার সান্তনা, তোমার হাসিতে লু...